জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। দুই দেশের সীমান্তে সামরিক সরবতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কূটনৈতিক ভাষ্যেও উগ্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ভারতকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে—“আমাদের পরীক্ষা নিও না।”

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বুধবার (৩০ এপ্রিল) দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (ISPR)-এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যেকোনও ধরনের আগ্রাসনের জবাব দিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত।” তিনি আরও বলেন, “আমরা একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র এবং আমরা শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক সমাধানের পক্ষপাতী। কিন্তু ভারত যদি আগ্রাসনের পথ বেছে নেয়, তবে আমরা তা প্রতিহত করতে প্রস্তুত।”

চৌধুরী স্পষ্টভাবে জানান, “আমরা যুদ্ধ চাই না, তবে যদি চাপিয়ে দেওয়া হয়, আমরা প্রত্যুত্তরে পিছপা হব না।” তার মতে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনী— সকল প্রতিরক্ষা সংস্থা সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।

এই হুঁশিয়ারি শুধু প্রতিরক্ষা বাহিনী নয়, পুরো জাতির পক্ষ থেকেও এসেছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, “ভারতের যে কোনও আগ্রাসনের জবাবে পাকিস্তানি জনগণ এবং সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি ইতোমধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই প্রতিবেশী দেশের মাঝে উত্তেজনার এই মাত্রা দক্ষিণ এশিয়াকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে। সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন এবং কূটনৈতিক পাল্টা-পাল্টি বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই বক্তব্য বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি করেছে। পরিস্থিতি শান্ত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। এখন দেখার বিষয়, দুই দেশ উত্তেজনার পথ থেকে সরে কূটনীতির পথে ফিরে আসতে পারে কিনা।