ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ভারী বর্ষণের কারণে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী ও নেত্রকোনা জেলার নিচু এলাকাগুলোতে বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র শুক্রবার (৩০ মে) জানিয়েছে, সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকায় পানির স্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আগামী তিন দিনের মধ্যে তা বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

সিলেট অঞ্চলের সুরমা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পানি উচ্চতা ক্রমেই বেড়ে চলছে। সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৩৪ সেমি (বিপদসীমা ১২.৭৫ সেমি) এবং সিলেট পয়েন্টে ৭.২২ সেমি (বিপদসীমা ১০.৮ সেমি)। কুশিয়ারা নদীর জকিগঞ্জের অমলসিদে ৯.৬৯ সেমি (বিপদসীমা ১৫.৪০ সেমি), শেওলায় ৮.২৯ সেমি (বিপদসীমা ১৩.০৫ সেমি) ও ফেঞ্চুগঞ্জে ৭.৫৭ সেমি (বিপদসীমা ৯.৪৫ সেমি) পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে।

পাহাড়ি নদ-নদীর মধ্যে কানাইঘাটের লোভাছড়ায় ৮.৬৪ সেমি, জৈন্তাপুরে সারি নদীতে ৯ সেমি, জাফলংয়ের ডাউকি পয়েন্টে ৯.২০ সেমি, গোয়াইনঘাটে সারি-গোয়াইনে ৮.০৬ সেমি এবং কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুরে ধলাই নদীতে ৮.১৬ সেমি পানি রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মেঘালয়ের বিভিন্ন অংশে গতকাল থেকে ভারী ও অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত ৪০-৬০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ১ ও ২ জুন বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও বজ্রপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সতর্ক করেছেন, “বর্তমানে নদীর পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে আগাম সতর্কতা গ্রহণ এবং প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”

নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ খাবার, ওষুধ, পরিষ্কার পানি ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি সতর্ক সংকেতের প্রতি সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদক-এ কে আজাদ, সিলেট।