উত্তপ্ত কাশ্মির সীমান্ত, টানা ছয়রাত ধরে চলছে গোলাগুলি

কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ফের চরমে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতেও দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। যদিও এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এই নিয়ে টানা ছয়রাত ধরে সীমান্তে গুলিবিনিময়ের খবর সামনে এলো।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, জম্মু ও কাশ্মিরের পারগওয়াল সেক্টরে পাকিস্তানের দিক থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারী গুলিবর্ষণ হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, এটি যুদ্ধবিরতির অন্যতম বড় লঙ্ঘন। বিশেষ করে কয়েকদিন আগে পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর এটি সবচেয়ে গুরুতর সংঘর্ষ বলেও মন্তব্য করা হচ্ছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, লাইন অব কন্ট্রোলের (এলওসি) তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে পাকিস্তান একতরফাভাবে গুলি চালিয়েছে এবং ভারত প্রতিটি হামলার যথাযথ জবাব দিয়েছে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বা দেশটির কোনও সংবাদমাধ্যমে এই বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই গোলাগুলির পেছনে রয়েছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একাধিক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার জেরে শুধু যে সীমান্ত উত্তপ্ত হয়েছে তা নয়, তীব্র কূটনৈতিক টানাপড়েনেও জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। ভারত ইতিমধ্যে সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে। জবাবে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের পাশাপাশি নিজেদের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
এছাড়া, উভয় দেশই প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এতে উভয় দেশের জনগণের মধ্যেও এক ধরনের আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এত বড় সন্ত্রাসী হামলা আর ঘটেনি। আর এই প্রেক্ষাপটেই সীমান্তে গোলাগুলি এবং কূটনৈতিক উত্তেজনার সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাশ্মিরের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চলে এধরনের গোলাগুলি এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র সীমান্তে নয়, গোটা উপমহাদেশে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলেও সতর্ক করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।