বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য আশ্রয় এখন আর কেবল স্বপ্ন নয়—তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ আবাসন উদ্যোগে। আজ মঙ্গলবার দেশের চারটি জেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ৩০০ নতুন ঘর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, আর এটি সম্পন্ন হয়েছে বরাদ্দের অর্ধেক বাজেটেই।
এই ঘর হস্তান্তর কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয় ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায়। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা সুবিধাভোগীদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন।
ঘর বিতরণ কার্যক্রমে ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি পরিবার নতুন ঠিকানার চাবি পেয়েছে। এসব ঘর বন্যায় সম্পূর্ণভাবে গৃহহীন হয়ে পড়া পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে তারা নিরাপদ ও সম্মানজনকভাবে বসবাস করতে পারে।
ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এই প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেক ব্যয় করেই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এটি সম্ভব হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এই ঘরগুলো শুধু আশ্রয় নয়, এটি মানুষের জীবনে নতুন আশার প্রদীপ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পটি প্রমাণ করে যে, সমন্বিত উদ্যোগ ও সদিচ্ছা থাকলে অল্প খরচে বিশাল প্রভাব তৈরি করা সম্ভব।
ঘর পাওয়া অনেক সুবিধাভোগীই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ বলেন, “বন্যায় সবকিছু হারিয়েছি, এই ঘরটা আমাদের নতুন জীবন।” কারও চোখে ছিল স্বস্তির জল—নতুন ঘরের চাবিতে যেন ফিরেছে জীবনের দিশা।
এই প্রকল্প শুধু একটি মানবিক দৃষ্টান্তই নয়, এটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের উদাহরণও বটে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এমন উদ্যোগে যেমন জনসম্পৃক্ততা বেড়ে যায়, তেমনি সরকারের প্রতি আস্থা বাড়ে সাধারণ মানুষের।