এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বড় চ্যালেঞ্জ ‘কারিগরি শিক্ষা’ : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি—আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডির সিপিডি অফিসে ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি এবং সংস্কার চিন্তাভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই খাতকে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা করা হয়েছে। বৈষম্যমূলক নীতির সংস্কার ছাড়া এসডিজির লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন হবে।”
ড. দেবপ্রিয় আরও বলেন, “বর্তমানে আমরা দেখছি শিক্ষার্থীরা নানা দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামছে। দুঃখজনকভাবে, নীতিনির্ধারকরা তাদের কথা শুনছেন না এবং মূলধারার মিডিয়াতেও এসব বিষয় যথাযথভাবে আলোচিত হচ্ছে না।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান। তারা জানান, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরতেই নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি’স এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
ড. দেবপ্রিয় জানান, ২০২৪ সালে সিপিডি ও সিটিজেনস প্ল্যাটফর্মের যৌথ উদ্যোগে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে একটি সামাজিক নিরীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এতে অংশ নেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা।
গবেষণায় উঠে আসে শিক্ষাদান পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা, দক্ষতা উন্নয়নের ঘাটতি, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে স্বীকৃতির অভাব এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি নেতিবাচক সামাজিক মনোভাবের বিষয়গুলো। এ গবেষণার আলোকে ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর ঢাকায় একটি জাতীয় সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জনশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হলে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার কাঠামোগত সংস্কার এখন সময়ের দাবি। সরকার যদি এই খাতে যথাযথ বিনিয়োগ ও নীতিগত অগ্রাধিকার না দেয়, তবে উন্নয়নের গতি থেমে যেতে পারে।