রাখাইন রাজ্যে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনা হয়নি—এমনই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং সময়মতো দেশের প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
প্রেস সচিবের ভাষায়, “সরকার এখন পর্যন্ত জাতিসংঘ কিংবা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত মানবিক করিডোর নিয়ে আলোচনা করেনি। আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার—যদি জাতিসংঘ নেতৃত্বে রাখাইনে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণভাবে লজিস্টিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে চরম মানবিক সংকট বিরাজ করছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ অতীতের মতোই মানবিক দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে।
প্রেস সচিব আরও বলেন, “মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ যে মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে, তা আমাদের মানবিক দায়িত্ববোধেরই প্রমাণ। তবে রাখাইনের অব্যাহত মানবিক দুর্দশা আমাদের জন্য আরেকটি উদ্বেগের কারণ। কারণ এর ফলে বাংলাদেশে নতুন করে শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কা রয়েছে, যা আমরা আর বহন করতে পারব না।”
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরিসরে একটি বড় শক্তির সংশ্লিষ্টতা এবং বাংলাদেশের ভূমিকা নিয়ে নানা গুজব ছড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, “এ ধরনের প্রচারণা ভিত্তিহীন, কল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা ইতিপূর্বেও এমন অপপ্রচারের মুখোমুখি হয়েছি এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে।”
তিনি যোগ করেন, জাতিসংঘের সহায়তায় ত্রাণসামগ্রী রাখাইন অঞ্চলে পৌঁছাতে পারলে সেখানে স্থিতিশীলতা ফেরানো সম্ভব হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাখাইনে সহায়তা পৌঁছানোর একমাত্র বাস্তব ও কার্যকর রুট বাংলাদেশ হওয়ায়, এ পথে ত্রাণ পাঠাতে নীতিগতভাবে প্রস্তুত রয়েছে সরকার। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংশ্লিষ্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।