লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে একটি F/A-18E সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান সমুদ্রে পড়ে গেছে। প্রায় ৮১০ কোটি টাকা (৬৭ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের এই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিমানটির সঙ্গে একটি টো ট্রাক্টর-ও পানিতে তলিয়ে গেছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন নৌবাহিনী।
ঘটনাটি ঘটে যখন বিমানটি হ্যাঙ্গার বে-তে অবস্থান করছিল এবং সরানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এক কর্মী। এতে করে বিমানসহ ট্রাক্টরটি রণতরী থেকে ছিটকে সাগরে পড়ে যায়। দুর্ঘটনার সময় একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকায় বিমানটি রণতরী থেকে খোলা ডেকের পরিবর্তে সরাসরি সমুদ্রে পড়ে। ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে।
তবে এই ঘটনায় একজন নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন বলে জানায় নৌবাহিনী। আহত নাবিকের পরিচয় গোপন রাখা হলেও তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
রণতরীটি এখনো লোহিত সাগরে অবস্থান করছে এবং অন্যান্য বিমান ও সরঞ্জাম নিরাপদ আছে বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। কীভাবে এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে নৌবাহিনী। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি শুধু মানবিক ভুল নয়, বরং প্রযুক্তিগত বা রক্ষণাবেক্ষণ ঘাটতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এ ঘটনার আগে, গত বছর একই মডেলের আরেকটি F/A-18E বিমান মার্কিন বাহিনীরই ভুল গুলিতে ভূপাতিত হয়। সেবার ইউএসএস গেটিসবার্গ রণতরী থেকে ছোঁড়া গাইডেড মিসাইলে বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, দুই পাইলট সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিমানবাহী রণতরী মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন রয়েছে, যার একটি হ্যারি এস ট্রুম্যান। মার্চ থেকে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যার বেশিরভাগ মিশন পরিচালিত হচ্ছে এই রণতরী থেকেই।
এই দুর্ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি এবং অপারেশন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
