ঐকমত্য কমিশনের সাথে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বৈঠক অনুষ্ঠিত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে আজ সংসদ ভবনের এল.ডি হলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে গুরুত্বপূর্ণ এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রস্তাবিত সংস্কার নিয়ে ২১তম দল হিসেবে এ আলোচনায় অংশ নেয় দলটি।
সভার সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড. ইফতেখারুজ্জামান, সুশাসনের প্রবক্তা ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং কমিশনের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়। দলে ছিলেন বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মুশতাক, মাহমুদ হোসেন, রাশিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম ও শেখ মোহাম্মদ শিমুল।
আলোচনায় দলটির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়—‘যা ইচ্ছে তাই চলবে না’—এমন একটি সরকার ও রাষ্ট্র কাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে। সাইফুল হক বলেন, “আমরা এমন এক সমাজ ও সংবিধান চাই যেখানে ধর্মীয় ও সামাজিক বিশ্বাসের কারণে কেউ বৈষম্যের শিকার হবে না।”
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল যেন জনগণ ঠিকভাবে পায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “জুলাই-আগস্টে গণতন্ত্রের জন্য মানুষের লড়াইকে সম্মান জানিয়ে আমরা একটি বৈষম্যহীন সামাজিক ও সাংবিধানিক কাঠামো নির্মাণে কাজ করছি।”
কমিশনের পাঠানো সংস্কার প্রস্তাবনায় ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ১২২টির সাথে একমত, ২১টির সঙ্গে আংশিক একমত এবং ২৩টি সুপারিশে ভিন্নমত প্রকাশ করেছে। আজকের আলোচনায় এসব বিরোধপূর্ণ বিষয়ের উপরই আলোচনা হয়।
প্রধান আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—সরকারের মেয়াদ ৫ না ৪ বছর, সরকারপ্রধান ও দলপ্রধান একই ব্যক্তি হবেন কিনা, সংসদ হবে এককক্ষ বা দ্বিকক্ষ, সংসদ সদস্য হওয়ার ন্যূনতম বয়স, এবং নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন-এই পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত ৩৫টি দল মতামত দিয়েছে এবং ২১টি দল সরাসরি আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
এই ধরনের আলোচনার মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি শক্তিশালী হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।