“আওয়ামী সরকারের অন্যায় আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী আজ জনরোষের মুখোমুখি”—এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে উদ্বোধনী ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে একটি দলীয় বাহিনীতে রূপান্তর করেছে। এর ফলে বহু সৎ ও নিরীহ পুলিশ সদস্যকে তাদের পেশাদারিত্বের মাশুল দিতে হয়েছে।”
ড. ইউনূস এ সময় জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬-এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে ঘিরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “পরাজিত কোনো শক্তি যেন নির্বাচনী পরিবেশ অশান্ত করতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। দেশের মানুষের আস্থা ফেরাতে হলে পুলিশকে দলমুক্তভাবে কাজ করতে হবে।”
নারী নির্যাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের সকল নারী যেন নির্ভয়ে পুলিশের সহায়তা নিতে পারে—তা নিশ্চিত করতে হবে। হটলাইন কার্যকর করতে হবে, যাতে যেকোনো নারী সেবা পান, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে।”
তিনি আরও বলেন, “মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মাঠ পর্যায় থেকে পুলিশের ভূমিকাই আসল। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা সবচেয়ে বড় শক্তি।”
এবারের পুলিশ সপ্তাহে গত ১১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশেষ অবদানের জন্য ৬২ জন পুলিশ সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) প্রদান করা হয়েছে। ব্যাজ পরিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা নিজেই। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫-এর মূল প্রতিপাদ্য—“জনতার পুলিশ, মানবিক পুলিশ”—উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, “এই স্লোগান শুধু মুখের কথা নয়, বাস্তবায়নই এর মূল চাবিকাঠি।”