প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ১৮, ২০২৫, ১০:০৫ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ২৬, ২০২৫, ৭:৩১ এ.এম
রাজস্ব ঘাটতি ছাড়াল ৭১ হাজার কোটি টাকা, টানা আন্দোলনে দিশেহারা এনবিআর

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস শেষে (জুলাই-এপ্রিল) রাজস্ব ঘাটতি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। মাত্র ৩.২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রাজস্ব আদায়ের এই দুর্বল চিত্র অর্থনৈতিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং শুল্ক—কোনো খাতেই নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে এনবিআর বিলুপ্তির গুঞ্জন এবং চলমান টানা ১৪ দিনের সর্বাত্মক আন্দোলন, যা রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
এনবিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। অথচ আদায় হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় কিছুটা বেশি (২ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ কোটি টাকা), তবে লক্ষ্যমাত্রা থেকে ঘাটতি বিশাল।
আয়কর খাতে বড় ঘাটতি
আয়কর আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা, যেখানে আদায় হয়েছে ৯৪ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি ৩২ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। যদিও প্রবৃদ্ধির হার ৪.৪৫ শতাংশ, কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে আছে এনবিআর।
ভ্যাট আদায়েও লক্ষ্যমাত্রা অধরা
স্থানীয় পর্যায়ে মূসক (ভ্যাট) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২২ কোটি টাকা, অথচ আদায় হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ২০২ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৭৯ শতাংশ, তবে তা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যথেষ্ট নয়।
শুল্ক খাতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি
সবচেয়ে উদ্বেগজনক চিত্র দেখা গেছে আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে রাজস্ব আদায়ে। শুল্ক খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা, অথচ আদায় হয়েছে মাত্র ৮১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ১.৩৬ শতাংশ, যা সামগ্রিক রাজস্ব প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এপ্রিল মাসে ঘাটতি আরও প্রকট
একক মাস হিসেবে এপ্রিলেও লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে রয়েছে রাজস্ব আদায়। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, অথচ আদায় হয়েছে ৩০ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা—ঘাটতি ৫ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরের জন্য প্রাথমিকভাবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা হয়। তবুও ঘাটতির এই চিত্র অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনিক স্থবিরতা, কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের অভাব এবং আন্দোলনের প্রভাবে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। ফলে উন্নয়ন ব্যয় ও বাজেট বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে সরকার।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সেলিমা শিরীণ খান
সম্পাদক : এ.এস.এম. জিয়া উদ্দিন খান
নির্বহিী সম্পাদক : ফেরদ্দৌসী খান লিয়া
সহকারী সম্পাদক : আবুল ফাত্তাহ সজু
বার্তা সম্পাদক :
সম্পাদক কর্তৃক - ২৩৩ , শফি মন্জিল , মডেল স্কুল রোড, গোপালগঞ্জ থেকে প্রকাশিত।
Copyright © 2025 Daily Shirin