পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলার ওয়ানা এলাকায় ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে কমপক্ষে নয়জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) দেশটির পুলিশ এই মর্মান্তিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে পিস কমিটির কার্যালয়ের কাছে, যা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। খবর জিও নিউজের।

এক বিবৃতিতে উপ-পুলিশ সুপার (ডিএসপি) ইমরানউল্লাহ জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। তাদের মধ্যে ১৬ জন বর্তমানে ওয়ানার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট (এমএস) জান মুহাম্মদ।

এর আগে ডেপুটি কমিশনার নাসির খান প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন, বিস্ফোরণে সাতজন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানা গেছে।

পুলিশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, বিস্ফোরণের ফলে পিস কমিটির কার্যালয় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। কে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোনো সংগঠন এখনো দায় স্বীকার করেনি। তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এই ঘটনার পর স্থানীয় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশেপাশের অঞ্চলগুলোতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে, কারণ এ ধরনের হামলা ভবিষ্যতে আবারও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনী, প্রশাসনিক ভবন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা বাড়ছে।

থিংক ট্যাঙ্ক ‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস)’ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার হার আগের মাসের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। এই তথ্য দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি নির্দেশ করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরণের হামলা শুধু পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যই হুমকি নয়, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে।