আরব সাগরে ভারতের শক্তি প্রদর্শন, উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে সফল মিসাইল পরীক্ষা

পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই সমুদ্রপথে নিজেদের শক্তি জানান দিল ভারতীয় নৌবাহিনী। আরব সাগরে একাধিক জাহাজ বিধ্বংসী (অ্যান্টি-শিপ) ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে তারা। ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, এই সাফল্য দেশের সমুদ্র নিরাপত্তা ও যুদ্ধ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
রোববার (২৬ এপ্রিল) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, আরব সাগরে মোতায়েন ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ থেকে ব্রহ্মোসসহ বিভিন্ন ভূমি বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। পরীক্ষাগুলোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছে নৌবাহিনী, যেখানে দেখা গেছে যুদ্ধজাহাজ থেকে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে মিসাইলগুলো।
ভারতীয় নৌবাহিনী এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে জানায়, “দীর্ঘ পাল্লার নির্ভুল হামলার সক্ষমতা যাচাই ও প্রদর্শনের অংশ হিসেবে প্ল্যাটফর্ম, সিস্টেম ও ক্রুদের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে একাধিক সফল অ্যান্টি-শিপ মিসাইল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনী দেশের সামুদ্রিক স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, বিশ্বাসযোগ্য ও ভবিষ্যতমুখী।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরীক্ষাগুলো শুধু সামরিক সক্ষমতার প্রদর্শনই নয়, পাকিস্তানের প্রতি একটি কৌশলগত বার্তাও। কারণ, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে।
উল্লেখ্য, হামলার ঘটনার পর ভারত একাধিক কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের উদ্যোগ। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সিন্ধু নদের পানি বন্ধ করা হলে তা সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে।
এই টানাপোড়েনের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) পরপর তিন রাত ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এমন সময়ে ভারতীয় নৌবাহিনীর এই মিসাইল পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবেই বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই শক্তি প্রদর্শন মূলত সামুদ্রিক আধিপত্য ধরে রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যত সংঘাতের প্রস্তুতি হিসেবেও দেখা হচ্ছে।