কাশ্মিরের প্যাহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় রক্তাক্ত হলো ভারতের মাটি। স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন নিরীহ পর্যটক। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এ মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা ভারত জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া ও তীব্র ক্ষোভের ঝড়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের বন্যা বইছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বলিউডের প্রথম সারির তারকারা পর্যন্ত এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন। বলিউডের কিং শাহরুখ খানও ক্ষোভ প্রকাশ করে মানবিকতার আবেদন জানান।

এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, “প্যাহেলগাঁওয়ে যে অমানবিক ঘটনা ঘটেছে, তাতে শোক প্রকাশের কোনো ভাষা নেই। এই সময়ে শুধু বিধাতার কাছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। এ ঘটনার ন্যায়বিচার চাইছি।”

এদিকে, কাশ্মিরের হামলার পেছনে ধর্মীয় মৌলবাদের প্রসঙ্গ উঠে আসায়, সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ইসলাম ও ‘জিহাদ’ প্রসঙ্গ। এমন সময়ে শাহরুখ খানের একটি পুরোনো ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে 'জিহাদ' শব্দের প্রকৃত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে শাহরুখ খান বলেন, "আমি মুসলিম। আমাদের ধর্মে 'জিহাদ' শব্দটির প্রকৃত অর্থ হলো নিজের ভেতরের খারাপ চিন্তাভাবনার বিরুদ্ধে লড়াই করা। জিহাদ কখনোই নিরীহ মানুষ হত্যা করার নাম নয়।" তাঁর এ বক্তব্য আবারও প্রমাণ করে, শাহরুখ সবসময় মানবতার ধর্মকেই বড় করে দেখেছেন।

শুধু বক্তব্যেই নয়, বরং বাস্তব জীবনেও শাহরুখ খান সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ মেনে চলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দেশের দুস্থ মানুষদের সাহায্য করে, ধর্ম নির্বিশেষে। এছাড়া নিজের সন্তানদেরকেও কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় পরিচয়ে নয়, বরং গর্বিত ভারতীয় হিসেবে বড় করেছেন তিনি।

কাশ্মিরের এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদে ভারতজুড়ে চলছে বিভিন্ন কর্মসূচি। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের হামলা শুধু নিরাপত্তাকে নয়, মানবতার মৌলিক ভিত্তিকেও চ্যালেঞ্জ করে।

কাশ্মিরে নিরীহ প্রাণহানির বিরুদ্ধে বলিউডের একতার বার্তা ও শাহরুখ খানের মানবিক অবস্থান গোটা সমাজে এক ধরনের আশার আলো ছড়াচ্ছে।